বন্যার দুর্গত সিলেট ও সুনামগঞ্জে ডাকাতির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ডাকাতির খবর জেনে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তা শেয়ার করতে শুরু করেছেন। কেউ কেউ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
শনিবার মধ্যরাতে সিলেট শহরের বাগবাড়ি, বর্ণমালা পয়েন্ট, আখালিয়া, কানিশাইল, শামীমাবাদ এবং সুনামগঞ্জ শহরের বাঁধনপাড়া, মরাটিলা, ময়নার পয়েন্ট, নতুনপাড়া, হাজিপাড়া ও হাসন নগরের বিভিন্ন বাসায় ডাকাতরা হানা দিয়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
এখন পর্যন্ত বড় কোনো ধরনের ডাকাতির সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে দুই-এক স্থানে চুরির ঘটনা ঘটেছে। তবে ফেসবুকে ডাকাতির ঘটনা ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই অঞ্চলের সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক পড়ে।
শনিবার, দিবাগত রাত ১টার পর এলাকার মসজিদের মাইকে ডাকাত প্রবেশের কথা জানিয়ে সবাইকে সচেতন থাকার ঘোষণাও দেওয়া হয়। রাত হলেও অনেকে সজাগ থেকে নিজেদের জান-মালের পাহারা দিচ্ছেন। বিশেষ করে সিলেটে বিদ্যুৎ না থাকায় চারপাশ অন্ধাকারচ্ছন্ন হওয়ায় আতঙ্ক আরও তীব্র হয়েছে।
সজল হোসেন নামে একজন লিখেছেন, ‘ত্রাণ নিয়ে এসেছি’ বলে ডাকে ওরা… বলে, কিছু খাবার নিয়ে এসেছি। দরজা খুলে দেখে ডাকাত!
নাইমুল ইসলাম মাহিন নামের একজন পোস্ট দিয়েছেন, ‘সিলেটের তেমুখী সাহাবের গাওয়ে প্রচুর ডাকাত আক্রমণ করেছে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ, র্যাবের সহযোগিতা কামনা করছি।’
সালমান আহমদ ফাহাদ নামের একজন লিখেছেন, ‘এক দিকে পানি তার ওপর আবার ডাকাতের আমদানি কোথায় যাবো আমরা?’
সমাপ্তি মৃন্ময়ী নামের একজন পোস্ট দিয়েছেন, ‘আমাদের বাসা পশ্চিম ভাটপাড়া, মোজরটিলা। আমাদের বাসার পাশে ডাকাত আসছে। ৯৯৯ এ কল দিচ্ছি, পাচ্ছি না।’
তানজীবা রহমান নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘আল্লাহর ওয়াস্তে কেউ সাহায্য করেন। সামিমাবাদ কানিশাইলে ডাকাত পড়েছে। আল্লাহর ওয়াস্তে সাহায্য করেন। চারপাশ অন্ধকার। মানুষজন চিৎকার করছে। হাহাকার করছে। মাইকিং অথবা সাহায্য করেন।’
তাহমিদুল ইসলাম নামের একজন পোস্ট দিয়েছেন, ‘বন্যা কবলিত সিলেট আর সুনামগঞ্জে গণহারে ডাকাতি হচ্ছে।’
নাফিস শামস তিয়াস নামে আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারী পোস্ট করেছেন, ‘কানীশাইল রোড নং ২ এ গণ ডাকাতি চলছে! সতর্ক থাকুন। ওসি কোতোয়ালি সাহেবকে জানিয়েছি।’
কাউসার আলম নামের একজন লিখেছেন, ‘আশপাশের দু’তিনটা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিচ্ছে, এলাকায় ডাকাতের আগমন ঘটছে। সবাই বাইরে চলে আসেন! সাবধানে থাকেন। মানুষের চিল্লাচিল্লি শোনা যাচ্ছে। (তেমুখির আশপাশে)’
নাজিমুর রশিদ চৌধুরী নামে একজন লিখেছেন, ‘চারদিকে মাইকিং শুনতে পাচ্ছি ডাকাত আক্রমণের। সবাই সতর্ক থাকুন।’
সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি অফিসের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব, গৌতম দেব গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সিলেট শহরে ডাকাতির বিষয়ে তেমন কোনো সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। অনেকে আতঙ্কিত হয়ে ফেসবুকে পোস্ট করছেন। আমরা শুনেছি কেউ কেউ মসজিদে মাইকিংয়ের সাহায্য চাচ্ছেন। সর্বত্র পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
এ পরিস্থিতিতে সবাইকে গুজব থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। স্বজনদের খোঁজে যাওয়া কিংবা জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষকে ডাকাত মনে করে গণপিটুনি না দিতে নিষেধ করা হয়েছে এবং কাউকে ডাকাত সন্দেহ হলে পুলিশকে জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
গৌতম দেব বলেন, এরপরও কোথাও ডাকাতি বা এ ধরনের কোনো সঠিক খবর পাওয়া গেলে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কন্ট্রোল রুমে (০১৩২০০৬৯৯৯৮) অথবা ৯৯৯ নম্বরে কল করুন। আমাদের পুলিশ সদস্যরা সব সময় সক্রিয় রয়েছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।